এক ফাজিল ছোকরার গল্প
বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়
রমা মনালিকে জিজ্ঞেস করে -- কীরে সাতসকালে বাড়ীতে আসতে বললি কেন ? কোন গুরুতর
ব্যাপার ?
মনালি একটু
হেসে বলে -- বারান্দায় চল; একটা জিনিস দেখাব। দু'জনে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। দূরের ফাঁকা বাড়ীটার দিকে দেখিয়ে রমাকে বলে - দ্যাখ। মূর্তিমান বসে আছে।
-- তুই এর কথাই বলেছিলি। তবে যাই বলিস ছেলেটা কিন্তু
বেশ হ্যান্ডসম দেখতে। মনালি বলে -- ওসব ফালতু কথা ছাড়। কী করা যায় বল তো ?
রমা গম্ভীর হয়ে বলে - শোন্ মনালি কোন আমড়াগাছির দরকার
নেই; সোজা গিয়ে চার্জ করব - কেন রোজ রোজ তোদের বাড়ীর দিকে চেয়ে বসে থাকে ?
মনালি বলে - একদম ঠিক বলেছিস; চল এক্ষুনি গিয়ে জিজ্ঞেস
করি।
দুজনে সোজা ছেলেটার কাছে এসে দাঁড়ায়। রমাই প্রথম কথা
বলে - কী ব্যাপার বলুন তো ? আমার এই বান্ধবীর বাড়ীর দিকে সকাল বিকাল হাঁ করে চেয়ে বসে
থাকেন ? রমা একটু থেমে আবার বলে - মানছি আমার বান্ধবীর চেহারাটা খুবই চটকদার; ছেলেরা
একবার দেখলেই ওর প্রেমে পরে যায় কিন্তু তা বলে সবসময় ওদের বাড়ীর দিকে তাকিয়ে থাকলে
পাড়ার লোকেরা কী বলবে সেটা একবার ভেবে দেখেছেন?
রমার কথা শুনে ছেলেটা মিট মিট করে হাসতে থাকে। এ এক
ধরনের গায়ে জ্বালা ধরান হাসি।
রমা রেগে গিয়ে জিজ্ঞেস করে -আমার কথা শুনে আপনার হাসি
পাচ্ছে?
-- হাসি পাবে না?
আপনি বললেন, আপনার বান্ধবীর চেহারায় চটক আছে। ওই সিরিঙ্গিপানা
প্যাকাটির মতো চেহারায় আবার চটক।
আর ওকে দেখার জন্য আমি এখানে বসে থাকি?
আপনি ভাবলেন কী করে এরকমটা ? আসলে কী জানেন; আমার
একটা ককার স্প্যানিয়েল কুকুর ছিল, একদম আপনার বান্ধবীর যে ককার স্প্যানিয়েল কুকুরটা
আছে, ওরকম দেখতে। কদিন আগে ও মারা গেছে। তাই
আপনার বান্ধবীর কুকুরটা কখন একটু বারান্দায় আসবে, ওকে দেখতে পাব সেই আশায় বসে থাকি।
রমা এবার হেসে ফেলে বলে -- ও এই ব্যাপার। তাহলে আমাদের
আর কিছু বলার নেই; তবে মনালিকে প্যাকাটি বলা আপনার ঠিক হয় নি, একথা বলে ওরা এগোতে থাকে।
ওরা কিছুটা এগোবার পর ছেলেটা ওদের লক্ষ্য করে বলে - এই যে ম্যাডাম, আপনার বান্ধবী সত্যি
সুন্দরী। আমি ওকে রাগাবার জন্য ও কথা বলেছিলাম। ওদের উদ্দেশ্যে একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে
দিয়ে ছেলেটা ফিক ফিক করে হাসতে থাকে।
Comments